বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা সর্বাত্মক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও আমাদের প্রাপ্তি কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি। সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য, ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচার, আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমবাজী আর গণন্ত্রের পরিবর্তে স্বেচ্ছাতন্ত্র জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এমতাবস্থায় দেশ ও জাতিকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে হলে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং বীর শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের দক্ষিণখান থানা পশ্চিম আয়োজিত স্বাধীনতা দিবস ফুটবল টুর্নামেন্ট ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাওলানা জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির রক্তব্য রাখেন উত্তরা পূর্ব জোন পরিচালন ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা। উপস্থিত ছিলেন বিমানবন্দর থানা আমীর এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল মতিন ফরহাদ, জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম শহীদ, ক্রীড়া সংগঠক ফিরোজ মোল্লা ও শিক্ষাবিদ আশরাফুল আলম প্রমূখ। আলোচনা সভাশেষে প্রধান অতিথি বিজয়ী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ক্রীড়া-সংস্কৃতিচর্চা স্বাস্থ্যবান ও মননশীল জাতি গঠন এবং নতুন প্রজন্মের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশে সহায়ক হয়। মূলত যুবসমাজকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত করতে হলে সুস্থধারার ক্রীড়া-সংস্কৃতি চর্চাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে। তাই প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ সৃষ্টিতে সরকার, ক্রীড়া সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, চ্যারিটি সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবান মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের দিনের যুবসমাজই আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যৎ। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুবসমাজই অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামসহ জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে যুবসমাজ থেকেছে আপোষহীন। তাই ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজকে নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতর করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি মহান স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আর্ত-মানবতার কল্যাণে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, মূলত, দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচ্যুতির কারণেই আইনের শাসন প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়নি। সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর আস্থা কথা বলা হলেও রাষ্ট্রাচারের কোন ক্ষেত্রেই সে প্রতিফলন নেই। মূলত, ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধই হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবজ। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে জাতিকে এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কথিত উন্নয়নের ঢাকঢোল পিটিয়ে গণমানুষের ভোটের অধিকারকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।